হিযবিয়্যাহর যথার্থ সংজ্ঞা | শাইখ রাবি আল-মাদখালি

সালাফি দাওয়াহ বাংলা



আল-আল্লামাহ রাবি বিন হাদি আল-মাদখালি – আল্লাহ তাঁর হিফাযাত করুন – বলেছেন:

বির পথ ও সুন্নাহর বিরোধিতা যারা করে, তাদের প্রত্যেকে পথভ্রষ্ট দল (হিয্‌ব) হিসেবে বিবেচিত হয়। দলবাজির (الحزبية) ক্ষেত্রে (বিশেষ) কোনো শর্তের প্রয়োজন নেই; আল্লাহ বিগত জাতিগুলোকে ‘আহযাব’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, এবং কুরাইশদের তিনি দল (হিয্‌ব) হিসেবে উল্লেখ করেছেন যখন তারা বিভিন্ন দলের সাথে ঐক্য ও মিত্রতা করে। তাদের কোনো সংগঠন বা সেরকম কিছু ছিল না, অতএব, হিয্‌ব (হিসেবে স্বীকৃত) হওয়ার জন্য কোনো সংগঠন থাকা শর্ত নয়। যদিও দলটি সংগঠিত হলে এর অসৎকাজ আরো বৃদ্ধি পায়।


কোনো বিশেষ চিন্তার (বা আদর্শের) প্রতি অন্ধ (সংকীর্ণ) গোঁড়ামি রাখা যা আল্লাহর কিতাব ও রাসুলের সুন্নাহর বিপরীত হয়, এবং এর ভিত্তিতে আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব ও শত্রুতা (প্রতিষ্ঠা) করা — এটাই তাহায্‌যুব (দল/মাসলাকবাজি), তা যদি সংগঠিত নাও হয়।

ভ্রষ্ট কোনো চিন্তা (বা মতাদর্শ) লালন করা এবং সেটা জুড়ে মানুষকে একত্র করা, এটি একটি দল (হিয্‌ব), তা সংগঠিত হোক বা না হোক। যতক্ষণ তারা কুরআন ও সুন্নাহর বিরোধিতায় কোনো কারণে (বা কারো পেছনে) ঐক্যবদ্ধ হয়, এটাই দল (হিয্‌ব)। যেসব কাফিররা নবির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল, তাদের আজকের ন্যায় কোনো সাংগঠনিক অবকাঠামো ছিল না; তবুও আল্লাহ তাদেরকে দল (হিয্‌ব) হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তা কীভাবে? এর কারণ হলো তারা বাতিলের সাথে একাত্মতা করেছিল এবং হকের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। (আল্লাহ বলেন):

كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَٱلْأَحْزَابُ مِنۢ بَعْدِهِمْۖ وَهَمَّتْ كُلُّ أُمَّةٍۭ بِرَسُولِهِمْ لِيَأْخُذُوهُۖ وَجَٰدَلُوا۟ بِٱلْبَٰطِلِ لِيُدْحِضُوا۟ بِهِ ٱلْحَقّ
“এদের পূর্বে নূহের কওম এবং তাদের পরে অনেক দলও (তাদের রাসুলদেরকে) অস্বীকার করেছিল। প্রত্যেক (অবিশ্বাসী) জাতিই স্ব স্ব রাসুলকে পাকড়াও করার সংকল্প করেছিল এবং সত্যকে বিদূরীত করার উদ্দেশ্যে তারা অসার বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিল।” [১]

দল গঠনের কারণে তাদেরকে হিয্‌ব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কুরাইশরা গাতাফান, কুরাইজাহ ও অন্যান্য বিভিন্ন গোত্রকে একত্র করেছিল, তবে তারা কোনো সংগঠনের আদলে সুসংবদ্ধ ছিল না। তারা একত্র হয়েছিল এবং আল্লাহ তাদেরকে হিয্‌ব হিসেবে উল্লেখ করেছেন, এভাবে (তাদের বিষয় সংক্রান্ত) এ সূরাটি “সূরা আল-আহযাব” নামে নামকরণ করা হয়েছে। ঐ দলগুলো কি সংগঠিত (বা কোনো সংগঠনের ছায়াতলে) ছিল? কোনো হিয্‌বের সংগঠিত হওয়া (বা কোনো সংগঠনের অধীনস্থ থাকা) শর্ত নয়। তা যদি কোনো বাতিল আদর্শে বিশ্বাস করে – তর্ক করে, বিবাদে লিপ্ত হয়, এবং এর স্বার্থে বন্ধুত্ব করে, এটা হিয্‌ব। এই (অঙ্গীকার) যদি আরো সুগঠিত হয় (সংগঠন বা কোনো সংগঠনের অধীনে), সম্পদ সক্ষমতা ইত্যাদিতে, তখন সন্দেহাতীতভাবে এর দলবাজি (হিযবিয়্যাহ) আরো গভীর হয়ে ওঠে এবং তা পথভ্রষ্ট দলগুলোর একটিতে পরিণত হয়। ওয়াল ইয়াযু বিল্লাহ। [২]


ফুটনোট:

[১] গাফির: ০৫
Next Post Previous Post
কোনো কমেন্ট নেই
কমেন্ট করুন
comment url