শুধু খাদ্য বা পানীয় নয়, রামাদানে গুনাহ ও অবাধ্যতা পরিত্যাগের গুরুত্বও অপরিসীম
﷽
আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেছেন যে,
আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেছেন:“যে লোক মিথ্যা কথা, সে অনুসারে কাজ করা এবং মূর্খতা পরিহার করলো না, আল্লাহর কাছে তার পানাহার বর্জনের কোন প্রয়োজন নেই।” [১]যেভাবে পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে, নৈতিক লঙ্ঘন সাওমের (রোজা) ক্ষতি করে। কোনো ব্যক্তি যদি গুনাহমূলক আচরণ করে, তার সাওম বৈধ কিন্তু এর নেকি কমে যায়, কিংবা সে রোজা পালনের জন্য কোনো সাওয়াবই অর্জন করতে পারে না। নৈতিক লঙ্ঘন হলো, গুনাহমূলক আমল, গুনাহমূলক কথাবার্তা, গুনাহের দৃষ্টি এবং অন্য যা কিছু আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) নিষিদ্ধ করেছেন। তো, একজন রোজাদার ব্যক্তি যখন এসব নিষিদ্ধ বিষয়াদিতে পতিত হয়, তার রোজা বাতিল হয়ে যায় না তবে তার সাওয়াবের ক্ষেত্রে ঘাটতি ঘটে। আর ঐ সাওমের কোনো কাফফারা নেই। পরিবর্তে, তার অবশ্যই অনৈতিক আচরণের জন্য তাওবাহ করতে হবে। হাদিসে উল্লেখিত মিথ্যা কথা সকল ধরনের নিষিদ্ধ কথাকে ধারণ করে, যেমন: গালাগালি, তিরষ্কার, গিবত (backbiting), চোগলখুরি (tale-carrying)। তাই, একজন মুসলিমের কথা ও কাজে মিথ্যাচার পরিহার করা ওয়াজিব—আর যদি কেউ আপনাকে গালাগাল দেয় কিংবা ভর্ৎসনা করে, তার প্রত্যুত্তরে আপনি অবশ্যই বাজে কথা বলবেন না, পরিবর্তে বলুন, আমি রোজা রাখছি, অর্থাৎ, আমার রোজা এমন শয়তানি কাজ করা থেকে আমাকে বাধা দেয় এবং রক্ষা করে। এটা নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক উল্লেখিত হয়েছে: “যদি কেউ তাঁকে গালি দেয় অথবা তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি রোজাদার।” [২] সুতরাং, আপনি জঘন্য গালাগালি করা দুশ্চরিত্র লোককে কোনো জবাব দিবেন না—এবং একজন মুসলিমের আচরণ এমনটাই হওয়া উচিত সে রোজাদার হোক বা না হোক।
শারীরিক দিক হলো, খাওয়াদাওয়া, পানাহার ও সহবাস থেকে নিয়তের সাথে বিরত থাকা। নৈতিক দিক হলো, পরনিন্দা (গিবত), চোগলখুরি, গুজব রটানো, অভিশাপ দেওয়া, মিথ্যাচার, মিথ্যা কথা বলা, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করা, হারাম কিছু দেখা (যেমন: মুভি, পর্নোগ্রাফি ইত্যাদি) এবং হারাম কিছু শুনা (যেমন গানবাজনা, পরচর্চা ইত্যাদি)।
নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন:
“রোজা কেবল খাদ্য ও পানীয় থেকে নয়; অনর্থক কথা, অশ্লীল আচরণ থেকেও বিরত থাকার নাম।” [৩]মিথ্যার ওপর আমল করার মানে হলো, হারাম (নিষিদ্ধ) কাজ করা, যেমন: মারামারি করা, আঘাত করা, হত্যা করা এবং অন্যের ওপর শারীরিকভাবে সীমালঙ্ঘন করা।
একই হাদিসে উল্লেখিত মূর্খতাপূর্ণ আচরণ করার অর্থ হলো, বোকামি করা, আর তা সুবিবেচনা ও চিন্তাশীল হয়ে কাজ করার বিপরীত। তাই, রোজাদার ব্যক্তি মূর্খতা ও অজ্ঞতাপূর্ণ আচরণ করবেন না, বরং তিনি হবেন চিন্তাশীল, বিবেকবান ও বিচক্ষণ।
তো, এমন ব্যক্তির সাওম আল্লাহর (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) প্রয়োজন নেই, অর্থাৎ তিনি (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) সে ব্যক্তির রোজা চান না কারণ আল্লাহ মুসলিমদেরকে সঠিকভাবে রোজা রাখার নির্দেশ দেন যা গুনাহ ও সীমালঙ্ঘন থেকে মুক্ত। এই হাদিস প্রমাণ করে যে, শুধু খাদ্য ও পানীয় ত্যাগ করার নাম রোজা নয়, বরং এর সাথে অবশ্যই গুনাহর পরিত্যাগও যুক্ত থাকা চাই। আর সাওম অশ্লীল আচরণের বিরুদ্ধে ঢালস্বরূপ, যেভাবে নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হিফাজাত করে এবং যার বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন সাওম পালন করে। কেননা, রোজা তার জন্য ঢালস্বরূপ।” [৪] একজন মুসলিমের জন্য গুনাহ এবং আল্লাহর (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকা সবসময়ই ওয়াজিব, কিন্তু রামাদানে এর ওপর আরো বেশি জোর দেওয়া হয়। [৫]
আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
“শয়তান ও অসৎ জিনদেরকে রামাদান মাসের প্রথম রাতেই শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং কোনো দরজাই খোলা থাকে না, আর জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় এবং কোনো দরজাই বন্ধ থাকে না। একজন ঘোষক ঘোষণা দিতে থাকে: ‘হে কল্যাণের অন্বেষণকারী! অগ্রসর হও। হে অকল্যাণের অন্বেষণকারী! বিরত হও।’ আর আল্লাহ বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেন এবং (এ মাসের) প্রতিটি রাতেই এমন হতে থাকে।” [৬]সুতরাং, খারাবি বা গুনাহ করা এবং আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হওয়ার নিয়তে রামাদান প্রবেশ করবেন না। আপনি যদি গুনাহর প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেন অথবা এতে পতিত হন, দ্রুত তাওবাহ করুন এবং নিজের পথ আরো একবার ঠিক করে নিন এবং আল্লাহর দিকে ফিরে আসুন কেননা তিনি পুরো রমাদানজুড়ে এর দিনে ও রাতে বহু মানুষকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত করেন।
এই রামাদান:
মুভিকে না বলুন
মিউজিককে না বলুন
ধূমপানকে না বলুন
মদকে না বলুন
পর্নোগ্রাফিকে না বলুন (দেখুন— পর্নোগ্রাফি থেকে উত্তরণ)
টিভি শোকে না বলুন
নেটফ্লিক্সকে না বলুন
পরনিন্দাকে (গিবত) না বলুন
অপবাদকে না বলুন
গুজব রটানোকে না বলুন
নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশাকে (Free-mixing) না বলুন
ব্যভিচারকে (যিনা) না বলুন
চুরিকে না বলুন
মিথ্যা বলাকে না বলুন
হিজাব খুলে ফেলাকে না বলুন
দাড়িমুণ্ডনকে (Shaving the beard) না বলুন
সুদ ও ক্রেডিট কার্ডকে না বলুন
মাতাপিতার সাথে অসদাচরণকে না বলুন
স্ত্রীর সাথে খারাপ আচরণকে না বলুন
স্বামীর সাথে মন্দ আচরণকে না বলুন
গালাগালিকে না বলুন
অভিশাপকে না বলুন
মারামারিকে না বলুন
হিপহপকে (Hip-hop) না বলুন
হলিউডকে না বলুন
বলিউডকে না বলুন
বর্ণবাদকে (Racism) না বলুন
শিশু নির্যাতনকে না বলুন
কাউকে শারীরিক বা মানসিকভাবে অপদস্থ করাকে (Bullying) না বলুন
অহংকারকে না বলুন
পারিবারিক সহিংসতাকে (Domestic violence) না বলুন
অন্যের ক্ষতি করাকে না বলুন
ছুরি-অপরাধকে (Knife-crime) না বলুন
বয়ফ্রেন্ডকে না বলুন
গার্লফ্রেন্ডকে না বলুন
…গুনাহকে না বলুন!
মিউজিককে না বলুন
ধূমপানকে না বলুন
মদকে না বলুন
পর্নোগ্রাফিকে না বলুন (দেখুন— পর্নোগ্রাফি থেকে উত্তরণ)
টিভি শোকে না বলুন
নেটফ্লিক্সকে না বলুন
পরনিন্দাকে (গিবত) না বলুন
অপবাদকে না বলুন
গুজব রটানোকে না বলুন
নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশাকে (Free-mixing) না বলুন
ব্যভিচারকে (যিনা) না বলুন
চুরিকে না বলুন
মিথ্যা বলাকে না বলুন
হিজাব খুলে ফেলাকে না বলুন
দাড়িমুণ্ডনকে (Shaving the beard) না বলুন
সুদ ও ক্রেডিট কার্ডকে না বলুন
মাতাপিতার সাথে অসদাচরণকে না বলুন
স্ত্রীর সাথে খারাপ আচরণকে না বলুন
স্বামীর সাথে মন্দ আচরণকে না বলুন
গালাগালিকে না বলুন
অভিশাপকে না বলুন
মারামারিকে না বলুন
হিপহপকে (Hip-hop) না বলুন
হলিউডকে না বলুন
বলিউডকে না বলুন
বর্ণবাদকে (Racism) না বলুন
শিশু নির্যাতনকে না বলুন
কাউকে শারীরিক বা মানসিকভাবে অপদস্থ করাকে (Bullying) না বলুন
অহংকারকে না বলুন
পারিবারিক সহিংসতাকে (Domestic violence) না বলুন
অন্যের ক্ষতি করাকে না বলুন
ছুরি-অপরাধকে (Knife-crime) না বলুন
বয়ফ্রেন্ডকে না বলুন
গার্লফ্রেন্ডকে না বলুন
…গুনাহকে না বলুন!
সোর্স: abukhadeejah.com
ফুটনোট:
[১] আল-বুখারি (৬০৫৭ নং), আবু দাউদ (২৩৬২ নং)
[২] আল-বুখারি (১৯০৪ নং), মুসলিম (১১৫১ নং)
[২] আল-বুখারি (১৯০৪ নং), মুসলিম (১১৫১ নং)
[৩] আল-হাকিম, ১/৪৩০-৪৩১, এবং তিনি একে সহিহ সাব্যস্ত করেছেন
[৪] বুখারি ও মুসলিম
[৫] দেখুন— শাইখ ফাওযানের ‘তাসহিলুল ইলমাম’, ৩য় খণ্ড, কিতাবুস সিয়াম
[৬] আত-তিরমিজি (৬৪২ নং)
[৪] বুখারি ও মুসলিম
[৫] দেখুন— শাইখ ফাওযানের ‘তাসহিলুল ইলমাম’, ৩য় খণ্ড, কিতাবুস সিয়াম
[৬] আত-তিরমিজি (৬৪২ নং)