হামাস নেতা, খোমেনি ও ইরান: গাজায় বারো ইমামি শিয়া মতবাদের বিস্তার

সালাফি দাওয়াহ বাংলা

আর্টিকেলটির মূল সংস্করণ ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয়।




হামাস মুসলিম ব্রাদারহুডের (আল-ইখওয়ান আল-মুসলিমিন) একটি শাখা যাদের (জামালুদ্দিন আল-ইরানির মাধ্যমে) ফ্রিম্যাসনিক (Freemasonic) অরিজিন রয়েছে। ওয়াহদাতুল আদইয়ান (Unity of Religions) ও গণতন্ত্রের (Democracy) পাশাপাশি আল-ইখওয়ানের উদ্দেশ্য হলো সুফি-শিয়া যোগসূত্রের মাধ্যমে মুসলিম ভূখণ্ডগুলোকে দখল করা। আল-ইখওয়ানের মৌলিক মতবাদ হচ্ছে ‘তাকরিব ’, যার অর্থ রাফিদাহ শিয়াদের নৈকট্য লাভ, তাওহিদ ও ঈমানের স্বার্থে তাদেরকে ‘ভাই’ মনে করা। ইসমাইল হানিয়া হামাসের একজন সিনিয়র রাজনীতিক এবং খালেদ মাশালও হাই র‍্যাংকিং রাজনৈতিক নেতা। নিম্নের ছবি দুটোতে এই দুই ইখওয়ানিকে প্যাগান মুশরিক এবং আবু বকর ও উমারের (رضي الله عنهما) শত্রু, ‘আয়াতুল্লাহ’ খোমেনির ওয়াসানে (প্রতিমা) দেখা যাচ্ছে।

লক্ষণীয়, এই সংযোগ কেবল রাজনৈতিক কোনো ব্যাপার নয়, যেখানে অংশীদারি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলই উদ্দেশ্য, যা ভিন্ন মতাদর্শ বা ধর্মীয় বিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও কোনো এক দেশের সাথে অন্য দেশের মধ্যে হতে পারে। বরং, বিষয়টি ধর্মভিত্তিক, এবং ধর্মীয় বিচারে একজন মুশরিক, কাফির, তাগুতের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শনের সাথে সম্পর্কিত। [১]

আরও দেখুন: Ghazi Hamad, Senior Hamas Figurehead on Belief in Democracy and Pluralization (2006)


এটাই হামাস আসলে কার পক্ষ নেয় তার ইঙ্গিত বহন করে। গাজায় ফিলিস্তিনিদের জীবন, সম্পদ, কল্যাণ (ও আকিদাহ-বিশ্বাসের) মূল্যে তা একইসাথে রাফিদাহ ও জায়নবাদীদের (Zionists) একটি কার্যকর টুল। এর নেতারা গণতন্ত্র ও বহুত্ববাদে (Pluralisation) বিশ্বাসী, এবং তাদের অজ্ঞতার কারণে তারা ইমান ও কুফর, তাওহিদ ও শির্‌কের মধ্যে কোনো পার্থক্য বুঝতে ও শনাক্ত করতে পারে না।

আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হলো, সংগঠন হিসেবে হামাস ফিলিস্তিনি মুসলিমদের পুরোপুরিভাবে প্রতিনিধিত্ব করে না, এবং হামাসের ব্যানারে থাকা কিংবা তাদের সমর্থন করা প্রত্যেকেই যে অপরিহার্যত তাদের নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্বাসের সাথে একমত তাও কিন্তু নয়।

ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য গণহত্যা (Genocide), জাতিগত নিধন (Ethnic cleansing), ভূমিচুরি (Land-theft), অপহরণ (Kidnapping) ইত্যাদি অপরাধ সংঘটনকারী দখলদার শক্তির (Occupying force) বিরোধিতা ও প্রতিরোধ করা ন্যায্য হলেও হামাসকে ফিলিস্তিনিদের ওপর ক্ষমতায় রাখাতে ইসরায়েলি ডানপন্থিদের (Israeli Right) সক্রিয় সমর্থন রয়েছে। কারণ, এটি তাদের পুরো ফিলিস্তিনে জাতিগত নিধনের দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত লক্ষ্য বাস্তবায়নের সুযোগ করে দেয়।

এভাবে, হামাসের মতো দলগুলো ইরানের এজেন্ট হওয়ার পাশাপাশি জায়নবাদীদের জন্য ট্রোজান হর্সের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। জায়নবাদীরা হামাসকে ধ্বংস করার এবং “ফিলিস্তিনিদের জন্য উত্তম ভবিষ্যৎ” প্রদান করার ছদ্মবেশে [২], হামাসকে সমর্থন ও শক্তিশালী করার পর, ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের ভূমি ও বাসস্থান থেকে বিতাড়িত করে। নেতানিয়াহুর কথায়, “এটাই আমাদের কৌশল।” ঐতিহাসিকভাবে হামাস গুপ্তচর ও অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা আক্রান্ত হিসেবে পরিচিত।

নেতানিয়াহু তার কৌশল প্রকাশ করছে

আরো বিস্তারিত জানতে দেখুন Hamas and the Israeli-right.


ফিলিস্তিনে বারো ইমামি শিয়া মতবাদের (শির্‌ক, কুফর) বিস্তার

বারো ইমামি শিয়া মুশরিক নেতারা ফিলিস্তিনিদের দুর্দশাকে তাদের কুফর ও শির্‌ক প্রচার করা, তাওহিদ ও সুন্নাহর আলো নিভিয়ে দেওয়ার একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে। ইরান এবং এর হিজবুল্লাহ প্রক্সিদের হামাসকে বস্তুগত সহায়তা দেওয়ার পেছনে এটাই কৌশল। শিয়া মতবাদ বিস্তারে তা একটি আবরণমাত্র।

উপরের ভিডিয়োতে ফিলিস্তিনের গাজার একজন খতিব গাজাবাসীদের মধ্যে রাফিদাহ শিয়া ও তাদের শির্‌কের অনুপ্রবেশ ও প্রভাব বিস্তারের চিত্র তুলে ধরেছেন। তিনি দেখান গাজায় এমন কিছু টুপি বা বালাক্লাভা (Balaclava) বিক্রি হচ্ছে, যেগুলোতে “ইয়া হুসাইন” লেখা রয়েছে, এবং হিজবুল্লাহর হাসান নাসরুল্লাহ ও আহমেদিনেজাদ রচিত বই বিতরণ হচ্ছে। তিনি মুশরিক, কাফির হাসান নাসরুল্লাহকে উদ্ধৃত করে বলেন:
“ইরানি বিপ্লবের কল্যাণে আমরা ফিলিস্তিনিদের ঘরে ঘরে শিয়া মতবাদ ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি।”
তিনি বলেন, “এই শুয়োরদের (রাফিদাহ) সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই”, এবং তারা কীভাবে ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন ও লেবাননের মতো প্রত্যেক স্থানে সুন্নি মুসলিমদের জবাই করে চলেছে তা ব্যাখ্যা করেন।


প্রতিটি ইরান সফরে খোমেনিকে হামাসের শ্রদ্ধা

খালেদ মাশাল তার বর্তমানে সাসপেন্ড হয়ে যাওয়া অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করেছিল:

“ইরান সফরকালীন হামাস আন্দোলন বা ইখওয়ানের কোনো নেতাই ইমাম খোমেনির মাজারে তার ভূমিকাকে সম্মান জানানোর লক্ষ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন না করে যান না...”

এবং

“ইরান ও তার নেতৃত্বের সাথে আমাদেরকে যা ঐক্যবদ্ধ করে, তা কেবল কোনো স্বার্থের ভাগাভাগি নয়, বরং তা খাঁটি ভ্রাতৃত্ব ও অভিন্ন ঈমানি বন্ধন।”

হামাস ও মুসলিম ব্রাদারহুডের সেসব নেতা, যারা আল-খোমেনির ওয়াসানের (প্রতিমা) পাশ দিয়ে না গিয়ে ইরান সফর করে না—যে ছিল একজন মুশরিক, তাগুত, কাফির, ইসলামের শত্রু, জিব্রিলের (عليه السلام) শত্রু, এবং আবু বকর ও উমরের (رضي الله عنهم) শত্রু—তারা জানে না ইসলামের মৌলিক বিষয়াদি কী, ঈমান ও কুফর এবং তাওহিদ ও শির্‌কের মধ্যকার পার্থক্য সম্পর্কে তারা অজ্ঞ। এসব এই লোকগুলোর গভীর জাহালাতের বহিঃপ্রকাশ।

উমার (رضي الله عنه) যখন জেরুজালেম জয় করেছিলেন, তখন এর রক্ষকরা তাদের অন্তরে থাকা ভয় ও শ্রদ্ধার কারণে একে তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিল, যা ছিল মুসলিম নেতা ও তাদের অনুসারীদের হৃদয়ের গভীরে গাঁথা প্রকৃত তাওহিদ ও ঈমানের প্রভাব। আজ মানুষ এমন ব্যক্তিদের দিকে তাকায়, যারা রাসুলদের তাওহিদের সাথে রাফিদি নেতাদের মাঝে বিদ্যমান রুবুবিয়্যাহর শির্‌কের পার্থক্য বোঝে না। তারা মনে করে, বিজয় ঐ গোষ্ঠীর সমর্থনের মাধ্যমে আসবে যারা দাবি করে আলি তাদের ঈশ্বর, নবিজির সাহাবারা কুফ্‌ফার, এবং আয়িশা (رضي الله عنها) তাদের দাবি অনুযায়ী যেমন ছিলেন তেমন, আল্লাহর ধারাবাহিক ও অবিরাম লানত তাদের ওপর বর্ষিত হোক।

আহলুস সুন্নাহ, যারা তাওহিদের বাস্তবায়নে সালাফদের পথের ওপর চলে, যখন ইলম ও বাসিরাহর ভিত্তিতে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি তাদের ইসলাম, তাদের জীবন, তাদের ধন-সম্পদ এবং তাদের ভূমির স্বার্থে খাঁটি ও আন্তরিক উদ্বেগ থেকে এসব প্রকৃত বাস্তবতাগুলো তুলে ধরে, তখন ড্যানিয়েল হাকিকাতজু এবং তার অনুসারীদের মতো মূর্খ, বিভ্রান্ত তাকফিরি প্রতিবন্ধীরা—যাদের মধ্যে বিদ্বেষ ও মাদকতাসদৃশ উন্মাদনা কাজ করে—এসবকে মুনাফিকি, রিদ্দাহ ও জায়নবাদীদের সাথে আঁতাত হিসেবে দেখে!

বরং, কেবল আল্লাহর সাহায্য তাওহিদের মাধ্যমেই আসে এবং কোনো জনগোষ্ঠীতে শির্‌কের (যেমন– বারো ইমামি শিয়াবাদ) প্রাদুর্ভাব ঘটলে আল্লাহর বারাকাহ ও সাহায্য বন্ধ হয়ে যায় বলা, অথবা রাফিদাহ ও খাওয়ারিজদের প্রকাশ্যে খণ্ডন করা এবং তাদের দ্বারা উম্মাহর ওপর আপতিত বিশাল ক্ষয়ক্ষতির কথা তুলে ধরা—যারা প্রায়শই কুফরি শক্তির এজেন্ট হিসেবে কাজ করে—অথবা মুসলিম শাসক ও সরকারগুলোর বিরুদ্ধে অস্থিরতা ও আলোড়ন সৃষ্টি করে মুসলিম অঞ্চলগুলোকে আরও অস্থিতিশীল করতে অস্বীকার করার কারণে (যার ফলশ্রুতিতে জনগণের ওপর নিপীড়ন বাড়ে এবং বহিঃশত্রুদের দ্বারা মুসলিম দেশগুলোকে আরো দুর্বল করার সুযোগ তৈরি হয়)... হাকিকাতজুর উথালপাথাল দুনিয়ায় কেউ ইসলামত্যাগকারী, মুনাফিক ও জায়নবাদী এজেন্টে পরিণত হয়!


ইরানে আল-খোমেনির ওয়াসানে (মূর্তি) শ্রদ্ধা জানাচ্ছে ইখওয়ানি হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া ও খালেদ মাশাল

বাম দিকের ছবিতে ইসমাইল হানিয়া এবং ডান দিকের ছবিতে খালেদ মাশালকে দেখা যাচ্ছে।

 
তারা একজন কাফির, মুশরিকের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করছে যে মদিনা দখল করার পর আবু বকর ও উমারকে (رضي الله عنهما) “দুই মূর্তি” বলে উল্লেখ করে তাঁদের কবর উচ্ছেদ করার ঘোষণা দিয়েছিল এবং আয়িশাকে (رضي الله عنها) জঘন্য শব্দে বর্ণনা করেছিল। তার ন্যায় প্রত্যেকের ওপর আল্লাহর ধারাবাহিক ও অবিরত লানত বর্ষিত হোক।

এটাই সাধারণভাবে আল-ইখওয়ান আল-মুসলিমিনের আদর্শ, একদিকে তা রাফিদাহ, কুবুরিয়্যাহদের প্রতি জাহাম বিন সাফওয়ানের চরম ইরজা, অন্যদিকে তা মুসলিম ভূখণ্ডগুলোর প্রতি খারিজিয়্যাহ—শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাবের (رحمه الله) দাওয়াহর মাধ্যমে যেসব আল্লাহর নিয়ামতপ্রাপ্ত, যেখানে আল্লাহর সাথে অন্য কোনো আওসানের (মৃত মানুষের মাজার) ইবাদাহ করা হয় না।


হামাস ও আহমেদিনেজাদ (সন্দেহভাজন গুপ্ত ইহুদি) ইরানি বিপ্লব উদ্‌যাপন করছে

ইরানে একটি মঞ্চে ইসমাইল হানিয়ার আরেকটি ছবি, তার পেছনে খোমেনি ও খামেনির বিশাল প্রতিকৃতি দেখা যাচ্ছে:

থিওডোর হার্জেলের ভাষায়, ‘অ্যান্টি-সেমাইট’ (ইহুদি-বিরোধিতা) জায়নবাদীদের শ্রেষ্ঠ বন্ধু, এবং জায়নবাদ ‘অ্যান্টি-সেমিটিজমের’ ওপরেই বিকশিত ও প্রকট হয়ে ওঠে, আর এর অনুপস্থিতিতে তা মরে যায় ও নিভে যায়। তাই, রাফিদাহ শিয়াদের বক্তব্যের—এক্ষেত্রে আহমেদিনেজাদের বক্তব্য, যার পরিবার গুপ্ত ইহুদিবাদের সন্দেহে অভিযুক্ত—মাধ্যমে কেউ যেন প্রতারিত না হয়।

দেখুন: Iranian President Was Born Jewish, More Jewish Roots, এবং Hiding Jewish Roots by Bashing Israel


হামাস ও ধ্বংসজজ্ঞ, এবং গাজাকে জায়নবাদীদের হাতে সমর্পণ

আরবি এক ভিডিয়োতে হামাস ও ইরানি রাফিদাহদের মধ্যকার জোট, পরবর্তী গোষ্ঠীর কুফর ও শির্‌ক, এবং ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে তাদের (রাফিদাহ) দাবির অসারতা প্রদর্শিত হয়েছে।

ভিডিয়োর শুরুতে একজন নারী গাজার ধ্বংসস্তূপের কথা বলতে গিয়ে বিলাপ করে বলেন, সব শেষ। এরপর হামাসের নেতাদের দেখানো হয়, যারা দম্ভভরে ইরানের সমর্থনে কথা বলছে—যা বাস্তবে অকার্যকর এবং এর কোনো বাস্তব প্রতিফলন নেই। এতে আরও দেখানো হয়েছে কীভাবে রাফিদাহরা বিশ্বাস করে যে কুরআনে উল্লিখিত আল্লাহ বলতে আলিকে (رضي الله عنه) বোঝানো হয়েছে, পাশাপাশি অবিশ্বাস, শির্‌ক ও পথভ্রষ্টতার অসংখ্য অন্যান্য বক্তব্য। লক্ষণীয় যে, হামাসের নেতারা যখন ইরানের নেতৃত্বের প্রশংসা করে, তখন শিয়ারা তাদের মধ্যে শিয়া মতবাদের সক্রিয় প্রচারক বা রক্ষাকারী শক্তি খুঁজে পায়, যা মূলত ইরানের ভূরাজনৈতিক এজেন্ডাকেই অগ্রসর করে।

মন্তব্য:

১.
খাওয়ারিজ বা তাদের বিষে আক্রান্তরা সন্দেহের ভিত্তিতে শাসক ও সরকারদের তাকফির করার ব্যাপারে পরিচিত, উপর্যুক্ত বিবরণের আলোকে, নিচের প্রশ্নগুলো অত্যন্ত উপযুক্ত ও ন্যায়সঙ্গত—এ বিবেচনায় যে বারো ইমামি শিয়াদের নেতৃত্ব হলো কাফির, মুশরিক, তাদের কুফরি স্পষ্ট ও প্রকাশ্য:

  • যে ব্যক্তি ইরানের মুশরিকদের প্রতি ধর্মীয় আনুগত্য প্রদর্শন করে, সে কি মুসলিম?
  • যে ব্যক্তি মুশরিক, মূর্তিপূজারী, আল্লাহর (عز وجل) শত্রু, জিব্রিলের (عليه السلام) শত্রু, আবু বকর ও উমারের (رضي الله عنهما) শত্রু এবং আয়িশার (رضي الله عنها) শত্রুদের কাছ থেকে বস্তুগত সাহায্য চায়, সে কি মুসলিম? নাকি কুফফারদের কাছ থেকে সামরিক সহায়তা নেওয়া জায়েয?
  • যে ব্যক্তি ধর্মনিরপেক্ষ আইন (Secular laws) দ্বারা শাসন করে, গণতন্ত্র ও বহুত্ববাদে বিশ্বাস করে এবং এসবকে শাসন ও কর্তৃত্বের গঠনতন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করে, সে কি মুসলিম?
  • যে ব্যক্তি ইরান ও ইরাকের বারো ইমামি শিয়াদের, সিরিয়ার নুসাইরি বাতিনিদের এবং ইয়েমেনের বারো ইমামি হুসিদের সুন্নি হত্যার অপরাধের দায় থেকে মুক্তি দেয়, মুসলিমদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে—সে কি মুসলিম? সে কি আহলুত তাওহিদের ওপর মুশরিকদের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করছে?

এই প্রশ্নগুলো উত্থাপন করা হয়েছে শুধু রাফিদাহ ও খাওয়ারিজদের সিয়াসাহয় (রাজনীতি) লিপ্তদের দ্বিচারিতা ও স্ববিরোধিতা উন্মোচনের জন্য—যাদের শত্রুতা, ঘৃণা ও উস্কে দেওয়া কেবল সুন্নি মুসলিম দেশগুলোর জন্যই সংরক্ষিত।

২.
আমরা ফিলিস্তিনের মুসলিমদের জন্য দোয়া করি, যাতে আগ্রাসীরা প্রতিহত হয় এবং তাদের জাতিগত নিধন, যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যা অভিযানের অবসান ঘটে। তবে এটা মনে রাখা জরুরি যে ফিলিস্তিনিদের হৃদয়, মন ও নেতৃত্ব দখলের জন্য বিভিন্ন ক্ষমতা ও শক্তি প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। সময়ের এই বিশেষ সন্ধিক্ষণে ইরান তার প্রক্সিদের মাধ্যমে (হিজবুল্লাহ, হুসি ও হামাস) এই প্রতিযোগিতায় বড় ভূমিকা রাখছে এবং এর মাঝেই বারো ইমামি শিয়া মতবাদের বিপদ নিহিত।

এ কারণে হামাসের মতাদর্শিক ঝোঁক, তাদের ধর্মীয় সম্পর্ক ও আনুগত্য সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত এবং এসবকে উপেক্ষা করা উচিত নয়।

৩.
সবশেষে, রাফিদাহ ও ইখওয়ান (যারা যথাক্রমে রাফ্‌দ ও খারিজিয়্যাহর প্রতিনিধিত্ব করে) আহলুত তাওহিদ, সুন্নাহ ও জামাআহর শত্রু। তারা নিজেদের এজেন্ডা এগিয়ে নিতে তাকরিব (নৈকট্য, ঘনিষ্ঠতা)-এর নীতি অনুসরণ করে একে অপরের সাথে সহযোগিতা ও মৈত্রী গড়ে তোলে।

ইসলামের প্রাথমিক ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করলে আপনি জানতে পারবেন যে, উসমান বিন আফফান (رضي الله عنه)-এর বিরুদ্ধে সাবাইয়্যাদের (Sabaʾiyyah) কর্মকাণ্ড—যারা “স্বাধীনতা”, “ন্যায়বিচার”, “সমতা”-র মতো স্লোগান তুলেছিল—সেই কর্মকাণ্ডগুলো ইসলামের প্রথম দুটো দল—শিয়া ও খাওয়ারিজদের উদ্ভবের জন্য সরাসরি দায়ী, ঠিক তখনই আপনি এদের “হাকিমিয়্যাহ”, “ইমামাহ”, “সামাজিক ন্যায়বিচার” ইত্যাদি স্লোগানের পেছনে আসল উদ্দেশ্য বুঝতে শুরু করবেন।

তখন আপনার কাছে এটাও পরিষ্কার হয়ে যাবে যে কেন আল-খোমেনি, কুতুব, মাওদুদি ও হাসান আল-বান্নার নাম একসাথে উচ্চারিত হয়। কারণ, তারাই সাবায়ি, খারিজি ও রাফিদিদের মতবাদ ও স্লোগানগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করেছে।

রাসুলদের তাওহিদ সমর্থিত স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার বা সমতা ইখওয়ান চায় না; তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। আমরা দেখি, মিশরের মাটিতে লক্ষাধিক মানুষের মূর্তিপূজার প্রতি তারা উদাসীন, অথচ একইসাথে ইরানের নব্য-সাফাভি মুশরিক মাজুসি রাফিদিদের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে ও জোটবদ্ধ হয়।

রাফিদাহ ও ইখওয়ানিয়্যাহ উভয়ই গাল্‌ফ কান্ট্রিগুলোর প্রতি—গুনাহ, অবাধ্যতা ও আল্লাহ নারাজ হন এমন বিষয়ের উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও যেসব সামগ্রিকভাবে শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাবের (رحمه الله) দাওয়াহর কারণে তাওহিদ ও সুন্নাহর প্রতিনিধিত্ব করে—তাদের নকশা তৈরি করে রেখেছে। তবে, বাহ্যিক দ্বীনদারিতার সাথে রুবুবিয়্যাহ ও উলুহিয়্যাহর শির্‌কের (যা রাফিদিদের মধ্যে পাওয়া যায়) চেয়ে কবিরা গুনাহ-সহ তাওহিদ উত্তম।

নিঃসন্দেহে, গাল্‌ফ কান্ট্রিগুলোতে রাফিদাহ, খারিজিয়্যাহ এবং সাথে সুফিবাদের উপস্থিতিকে বিভেদ সৃষ্টি, তাওহিদ ও সুন্নাহর আলোকে দুর্বল (বা ধ্বংস) করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও করা হবে। আল্লাহ এসব দেশের ভূমি, শাসক, উলামা ও জনগণকে এই অনিষ্ট থেকে রক্ষা করুন এবং সমগ্র মুসলিম বিশ্বকে শত্রুদের চক্রান্ত থেকে হিফাজত করুন—রাফিদাহ ও খারিজিরা যাদের টুল ও এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে।

সোর্স: abuiyaad.com

ফুটনোট:
[১] সুন্নি মুসলিম রাষ্ট্র ও নেতৃবৃন্দ প্রায়োগিক ও কল্যাণকর স্বার্থের কারণে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শিয়া মতাবলম্বীদের সাথে চুক্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে পারেন। তা পার্থিব স্বার্থপ্রসূত এবং মুদারাত (কূটনৈতিক কৌশল)-এর অন্তর্ভুক্ত। যা তাদের ধর্মীয় মতবাদ, পথভ্রষ্টতা বা সেগুলোর সাথে আপসকামিতাকে বৈধতা দেওয়া বা সমর্থনের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
[২] অর্থাৎ, বাস্তুচ্যুত শরণার্থীদের অন্যত্র সাহায্য ও আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি—জায়নবাদীদের দৃষ্টিকোণ থেকে—একটি কৌশল, যার লক্ষ্য তাদের ভূমি থেকে তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে উচ্ছেদ করা।
Next Post Previous Post
2 Comments
  • Anonymous
    Anonymous April 9, 2025 at 6:55 AM

    First to last, I have watched all vedio, adio, link, there is no problem each other, of all Muslim world, there is need unity, but salafi s are prohabiting mis unity, as like as Egypt military pro govt atucrate Sisi govt againt Ekuanul muslamin, sorry message for muslim,those are not unity




    • Anonymous
      Anonymous April 9, 2025 at 1:05 PM

      Unity with the Shi'ite Mushrikin? Your comment implies you didn't read it first to last.

কমেন্ট করুন
comment url